মানুষের হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তায়লা পৃথিবীতে অসংখ্য নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। নবীরা আমাদের সমাজের সাধারণ মানুষ ছিলেন। তারা আমাদের মতোই সব কাজ-কর্ম করতেন। সাধারণ মানুষের মধ্য থেকেই কিছু মানুষকে পুরো জাতির হেদায়েতের জন্য নির্বাচন করতেন আল্লাহ তায়ালা।
মানুষের মতোই খাবার খেতেন, ঘুমাতেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতেন, ক্লান্ত হতেন। তারাও বিয়ে-শাদী করতেন। স্বাভাবিক জীবনযাপন করেই তারা মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতেন।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, যেভাবে আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫১)
নবী-রাসুলদের এমন স্বাভাবিক জীবনযাপন সেই যুগের অবিশ্বাসীদের হতবাক করতো। তারা ভাবতো—নবীরা যদি সত্যি সত্যিই আল্লাহর দূত হয়ে থাকেন, তাহলে তো তাদের জীবনযাপন ভিন্ন হতো, তারা আমাদের মতো স্বাভাবিক কাজকর্মের ঊর্ধ্বে থাকতেন।
নবী-রাসুলদের নিয়ে অবিশ্বাসীদের এমন প্রশ্নের বিষয়টি নিয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—
তারা বলে- ‘এ কেমন রাসুল যে খাবার খায়, আর হাট-বাজারে চলাফেরা করে? তার কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় না কেন যে তার সঙ্গে থাকত সতর্ককারী হয়ে? অথবা তাকে ধনভান্ডার ঢেলে দেওয়া হয় না কেন অথবা তার জন্য একটি বাগান হয় না কেন যা থেকে সে খেতে পারে?’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭-৮)
একই সুরার অন্য আয়াতে অবিশ্বাসীদের এমন সন্দেহ-সংশয়ের জবাব দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা এবং জানিয়েছেন নবী-রাসুলগণ অন্যদের মতোই মানুষ,তারা ফেরেশতা বা অন্য কোনো সৃষ্টি নয়। আর মানুষ ছাড়া অন্য কোনো সৃষ্টিকে আল্লাহ তায়ালা হেদায়েতের দূত বানালে তখন তারা বলতো, সে তো আমাদের মতো মানুষ নয়, তার তো আমাদের মতো ব্যস্ততা নেই, তাই সে আমাদেরকে হেদায়েতের বাণী শুনিয়ে বেড়ায়।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে— আর তোমার পূর্বে যত নবী আমি পাঠিয়েছি, তারা সবাই আহার করত এবং হাট-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের একজনকে অপরজনের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা কি ধৈর্যধারণ করবে? আর তোমার রব সর্বদ্রষ্টা। (সুরা ফুরকান, আয়াত : ২০)
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: