হাদিসে ৭টি জিনিসকে ধ্বংসাত্মক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রা.-থেকে বর্ণিত, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা ৭টি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকো’ তখন সাহাবায়ে কেরাম রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বলুন, সে কাজগুলো কী কী?
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৭ জিনিসের কথা বললেন, জিনিসগুলো হলো: ১. আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা ২.যাদু করা ৩.অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা ৪.সুদ খাওয়া ৫.গরীবের সম্পদ আহার করা ৬.যুদ্ধের মাঠ থেকে পলায়ন করা ৭. সতী-সাধ্বী নারীকে (জিনার) অপবাদ দেয়া (সহিহ বুখারি: ২৭৬৬, সহিহ মুসলিম ৮৯)
এ সাত জিনিসের ব্যখ্যায় মুহাদ্দিমগণ অনেক আলোচনা করে থাকেন। ১. আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা। এটি আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী উভয়টির সাথে হতে পারে। এটি সবচেয়ে বড় পাপ এবং ইসলামিক বিশ্বাসের সাংঘর্ষিক।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা শিরক গুনাহকে ক্ষমা করেন না,এছাড়া অন্যান্য গুনাহ ক্ষমা করেন।’ (সুরা: নিসা, আয়াত: ৪৮)
২. যাদু করা: যাদু বা কালো জাদু করা ইসলামিক শিক্ষায় হারাম। এর মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়। তাদের ক্ষতি করা হয়। যাদু মানুষের বিশ্বাস ও আকিদাকে নষ্ট করে এবং সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে।
৩. অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা: কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা ইসলামি আইনে গুরুতর অপরাধ। ইসলাম কাউকে হত্যা করার অনুমতি দেয় না। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করোনা’ (সুরা: ইসরা, আয়াত: ৩৩)
৪. সুদ খাওয়া: সুদখোরী ইসলামি অর্থনীতিতে নিষিদ্ধ। সুদ সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে। অর্থনৈতিক ভারসাম্য পঙ্গু করে ফেলে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তায়ালা ব্যবসাকে করেছেন হালাল ও সুদকে করেছেন হারাম।’ (সুরা: বাকারাহ, আয়াত: ২৭৫)
৫. গরীবের সম্পদ আহার করা: গরীবদের সম্পদ-অধিকার চুরি বা আত্মসাতের মাধ্যমে গ্রহণ করা অত্যন্ত মহাপাপ। ইসলাম মানুষের অধিকার রক্ষা করতে শেখায়। কোরআন ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইয়াতিম-গরীবদের সম্পদ ভক্ষণ করোনা’। (সুরা: নিসা, আয়াত: ১০)
৬. যুদ্ধের মাঠ থেকে পলায়ন করা: যুদ্ধের সময় মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ থেকে পলায়ন করা নিষিদ্ধ। ইসলামিক যুদ্ধে বীরত্বের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। যুদ্ধের ময়দানে পলায়ন করা অন্যদের জীবনের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করা হয়। এটা এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতার নামও।
৭. সতী-সাধ্বী নারীকে (যিনার) অপবাদ দেওয়া: কোনো সতী-সাধ্বী নারীকে যিনার অপবাদ দেওয়া এক ধরণের পাপ। এটি নারীদের সম্মান ক্ষুণ্ন করে। সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে। ইসলাম কঠিনভাবে এর প্রতিবাদ করেছে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
নিশ্চয়ই যারা সতী-সাধ্বী, অবলা নারীদের প্রতি (যিনার) অপবাদ দেয় তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত । এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (সুরা: নূর, আয়াত: ২৩)
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: