দেশের সাম্প্রতিক অঘটন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং নির্বাচনকে ঘিরে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। তিনি বলেন, যেহেতু জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে আইনগত ভিত্তি প্রদান করতে হবে। নির্বাচনের বিলম্বই বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বাড়িয়ে তুলছে। নির্বাচনের নামে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি ১/১১ সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি অপরিহার্য। এজন্য ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে। বর্তমান প্রশাসন পরিবর্তন না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
রাশেদ খান স্পষ্ট করে বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ ডামি, স্বতন্ত্র বা অন্য কোনো দলের ব্যানারে প্রার্থী হতে পারবে না। একইসঙ্গে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকেও নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের মতো তাদেরও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা জরুরি।
শিক্ষক আন্দোলনের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি ন্যায্য। তাদের দাবিগুলো দ্রুত মেনে না নিলে শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে আমরা যমুনা-সচিবালয় ঘেরাও করব। শিক্ষকদের কষ্ট দিয়ে কেউ গদিতে টিকতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হতে পারে। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এসব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং বিমান, স্থল ও নৌবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সরকারকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানিয়ে এসেছি, কিন্তু দুঃখের বিষয়— সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন এখনও দেখা যায়নি। আইনশৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকারের মতো জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া আর যেন না ঘটে— সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে।
দলটির এই মুখপাত্র বলেন, গণঅধিকার পরিষদ দেশের জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা আর কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না। তাই আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম আজহার এবং ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রিদওয়ান উল্লাহ খান প্রমুখ।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: