[email protected] ঢাকা | রবিবার, ২৬শে অক্টোবর ২০২৫, ১০ই কার্তিক ১৪৩২
thecitybank.com

গণঅধিকার পরিষদ সংসদের উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে: রাশেদ খান

চাঁপাই জার্নাল ডেস্ক:

প্রকাশিত:
৬ অক্টোবার ২০২৫, ২০:০৮

ছবি: সংগ্রহীত
গণঅধিকার পরিষদ সংসদের উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিম্নকক্ষ পিআর কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়। এই ব্যবস্থা চালু হলে সকাল-বিকাল সংসদ সদস্যদের কেনাবেচা হবে।
 
সোমবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক যুব ঐক্য আয়োজিত ‘গুণমানসম্পন্ন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
 
রাশেদ খান বলেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের পেছনে উপদেষ্টাদেরও ইন্ধন থাকতে পারে, তাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে গাদ্দার উপদেষ্টাদের নাম প্রকাশ করতে হবে।
 
তিনি আরও বলেন, এনজিও উপদেষ্টারা যেদিন শপথ নিয়েছেন সেদিনই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পথ খুলেছে। এটাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। নির্বাচন বানচালের মধ্যদিয়ে যদি অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়, তাহলে তার দায়ভার নাহিদ ইসলামকেও নিতে হবে।
 
আলোচনার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আলোচনা এখনও শেষ হয়নি। তাই এই আলোচনার মাঝপথে আন্দোলনে ঝাপ দেওয়া সঠিক হবে না। আমি মনে করি, এতে করে ফ্যাসিবাদই সুযোগ পাবে। আমাদের উচিত আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো।
 
রাশেদ খান বলেন, আমরা সবাই স্বপ্ন দেখি একটি নতুন বাংলাদেশের। সেই নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য জাতীয় ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়া, সমঝোতা গড়ে তোলা জরুরি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের প্রশ্নে, তাদের দোসরদের প্রশ্নে এবং ভারতের আধিপত্যবাদের প্রশ্নে আমাদের মধ্যে অন্ততপক্ষে ন্যূনতম ঐকমত্য থাকা উচিত।
 
তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ করছি বিভাজন। এই বিভাজন নিয়েই যদি আমরা নির্বাচনে যাই, তাহলে সেই নির্বাচন বানচাল করে দেবে আওয়ামী লীগ ও ভারত। তাই ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সবাইকে এক কাতারে থাকতে হবে।
 
আগামী ৮ অক্টোবর জাতীয় ঐক্য কমিশনের চূড়ান্ত আলোচনার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আহ্বান থাকবে— আসুন, সবাই ছাড় দিয়ে হলেও জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করি। দেশ ও জনগণের স্বার্থে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। আমরা যদি ছাড় না দেই, তাহলে এই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
 
তিনি আরও বলেন, ৮ আগস্ট যেদিন কিছু এনজিওমার্কা উপদেষ্টার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিল, সেদিনই গণঅভ্যুত্থান অনেকটা ব্যর্থতার দিকে ধাবিত হয়েছে। অথচ এই গণঅভ্যুত্থানের জন্য আমাদের তরুণ প্রজন্ম রক্ত দিয়েছে, সংগ্রাম করেছে— এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেওয়া যায় না। এটিকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।
 
গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, বিভিন্ন এলাকার ভোট কোথায় যাবে, সেটা আমাদের এখন থেকেই মাথায় রাখা দরকার। কারণ পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন) ব্যবস্থার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে পারে, সেটাও আমাদের অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
 
নাহিদ ইসলামের প্রতি ইঙ্গিত করে রাশেদ খান বলেন, আপনি বলেছেন কিছু গাদ্দার উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আমি বলবো— অনতিবিলম্বে সেই চক্রান্তকারী উপদেষ্টাদের নাম প্রকাশ করুন। নইলে তারাও নির্বাচনি ষড়যন্ত্র করতে পারে। যদি আপনি নাম প্রকাশ না করেন এবং গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়, তবে তার দায়ভার আপনাকেও নিতে হবে।
 
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেছেন এবং তারা এখন নিজেদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে ভাবছেন।
 
তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যারা উপদেষ্টা হয়েছেন তাদের অনেককে বিশ্বাস করাটা ভুল ছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া।
 
নাহিদ আরও অভিযোগ করেন, নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলের ওপর আমরা যে বিশ্বাস রেখেছিলাম, সেখানে আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন বা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। যখন সময় আসবে, তখন এদের নামও উন্মুক্ত করা হবে।
 
নাহিদের বিস্ফোরক মন্তব্যের জেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে তার বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে নেটিজেনরা পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।
 
ডেস্ক/ই.ই

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর