দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র দেখছে এই সময়ের অন্যতম প্রধান রাজনৈতক দল বিএনপি। শুধু দেশে নয়; আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে দলটি। সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির ধুয়া তুলে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দল জামায়াত এবং ইসলামী আন্দোলন নির্বাচন বানচালের চক্রান্তে নেমেছে, এমনকি বিএনপির বিরুদ্ধে অপবাদ ও অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন শীর্ষ নেতারা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয়। সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় সনদ বা জুলাই সনদের খসড়া তৈরি করেছে। এই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলোর মধ্যে বাগাড়ম্বর চলছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সরকার ঘোষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছরে রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারও বারবার দৃঢ়তার সঙ্গে বলে আসছে, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। দেশ এজন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এদিকে সংবিধানের উপরে জুলাই সনদের স্থান দেয়া, জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন, সংসদের উভয়কক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচন, গণভোট ও গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু আলোচনা পাশ কাটিয়ে আন্দোলনে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল। জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় পার্টি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল নিষিদ্ধ করার দাবিতে দুই দিন সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দলগুলো। তাদের হুঁশিয়ারি, জুলাই সনদ ও পিআর ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়।
এর বিরোধিতা করে বিএনপি বলে আসছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে আগামী নির্বাচিত সরকার। পিআর পদ্ধতিতে কোনো ভোট হবে না। কোনো দল নিষিদ্ধ করারও পক্ষে নয় তারা। সরকার ঘোষিত দিনেই ভোট হবে। জনসমর্থন না থাকায় ভোট বানচালের চক্রান্ত করছে; যে পিআর জনগণ জানে না, তা নিয়ে আওয়াজ তুলছে। সরকার জামায়াতসহ একটি গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির নেতারা। আলোচনার টেবিল থেকে আন্দোলনের বিষয়টিও ভালোভাবে নিচ্ছে বিএনপি। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান থাকায় জামায়াতে ইসলামীর কঠোর সমালোচনা করে আসছে বক্তব্য-বিবৃতিতে।
এদিকে ‘নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন’ বলে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরও গত ২৪ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সমমনা দলগুলো নিয়ে উভয়পক্ষই রয়েছে কঠোর অবস্থানে।
নির্বাচন ঘিরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা আগে থেকেই বলে আসছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এ বছরের শুরুতে গত ২৯ জানুয়ারি ঝিনাইদহ, যশোর ও নড়াইল জেলা বিএনপির কর্মশালায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমি প্রতিবারই বলছি সামনের পথ মোটেও মসৃণ নয়। বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জনগণের আস্থা নষ্ট হয়, এমন কোনো কাজ করা যাবে না।
এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে নিয়ে অনেকেই এখন ষড়যন্ত্র করছে। ‘চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র’ করে জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। এই দলটিকে নিয়ে ভিত্তিহীন ও মুখরোচক সমালোচনা করার একটাই কারণ, সেটি হচ্ছে বিএনপির কর্মীরা যাতে উত্তেজিত হয় এবং এর ফলশ্রুতিতে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
গত শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চলছে। অপবাদ দেয়া হচ্ছে। বিএনপি ৪৭ বছর দেশের
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: