প্রকাশিত:
২১ জুন ২০২৫, ১৭:৩৯
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। এরইমধ্যে ২৯৮ টি আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গণসংযোগের পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থী এবং নির্বাচনি কাজে সম্পৃক্ত দায়িত্বশীলদের প্রশিক্ষিত করছে জামায়াত। একইসঙ্গে নির্বাচনি কেন্দ্র ও বুথভিত্তিক কমিটি গঠন করে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে দলটি।
সূত্রমতে, কেন্দ্রের উদ্যোগে ঢাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক সংশ্লিষ্ট আসনের দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। জামায়াতর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জতুল্লাহ এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সমন্বয় করছেন বলে জানা গেছে।
এসময় প্রার্থীদের নির্বাচনি বিভিন্ন আইনকানুন, প্রচারণার কৌশল সহ তাদের করণীয় নানা নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। এছাড়া আঞ্চলিক দায়িত্বশীলরাও প্রার্থীদের নিয়ে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে প্রার্থী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আসন ও ভোট কেন্দ্রভিত্তিক দলীয় কমিটি নিয়েও সমাবেশ সহ নানা কর্মকান্ড চালাচ্ছে জামায়াত। এসময় তাদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন নেতারা। পর্যায়ক্রমে বুথভিত্তিক কমিটি নিয়েও এ ধরণের সমাবেশ ও মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচন ঘিরে আগাম প্রচার, গণসংযোগের পাশাপাশি দলীয় দায়িত্বশীলদেরকে প্রস্তুত করছে জামায়াত।
প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে ঢাকা-৬ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ড. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, নির্বাচন কমিশন যেভাবে তার নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়, তেমনি জামায়াতের দলীয় প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসময় প্রার্থীদের করণীয়, আইন মেনে চলা, ভোট কেন্দ্র নিয়ে নানা পরিকল্পনা, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো সহ নানা বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেয়া হচ্ছ্। এরইমধ্যে ঢাকার প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ হয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচন ঘিরে আসনভিত্তিক এবং ভোট কেন্দ্র ও বুথভিত্তিক কমিটি গঠন করেছে জামায়াত। এরইমধ্যে আসন ও কেন্দ্রভিত্তিক কমিটিগুলোর সদস্যদের সক্রিয় করছে দলটি। ঈদের পর এ তৎপরতা জোরদার হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন আসনের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির সদস্য সমাবেশ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রচার বিভাগের সহকারী সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন আসনের কেন্দ্রভিত্তিক কমিটির সদস্য সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ সহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত থাকছেন। শুক্রবারও ঢাকা-৫ আসনের কেন্দ্র কমিটি নিয়ে এ ধরণের একাধিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় সরকার ঘোষিত সময় সীমার মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান নূরুল ইসলাম বুলবুল। তবে তার আগে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার সহ রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার করতে হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী চায়, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন। যেই নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকবে। কেউ পেশি শক্তি ব্যবহার করে ভোট কেন্দ্র দখল নিতে পারবে না, নিজেরাই নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবে না। নির্বাচন মানে যুদ্ধ উল্লেখ করে তিনি এই যুদ্ধে দেশ ও জাতির জন্য বিজয় নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনিদের্শনা প্রদান করেন।
শফিকুল ইসলাম মাসুদ উপস্থিত দায়িত্বশীল নেতাদেরকে আগামী নির্বাচনে ভোট ডাকাতদের প্রতিহত করতে বিভিন্ন কৌশল ও দিকনিদের্শনা দিয়ে বলেন, ভোট আমানত। এই আমানত রক্ষায় জনগণের পাশে থাকতে হবে। প্রতিটি ভোটার নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে এসে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত সার্বিক সহযোগিতা করতে তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ অন্য নেতারা। শুক্রবার বিভিন্ন আসনে ইউনিট দায়িত্বশীলদের নিয়ে সমাবেশ করেন তিনি। এছাড়া জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানকেও শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর এলাকায় রুকনদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের যুব বিভাগের সেক্রেটারি হাসানুল বান্না চপল জানান, ঢাকা উত্তর এলকায় সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে প্রায় ৯৮ টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রভিত্তিক একটি কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া বুথভিত্তিকও কমিটি রয়েছে। নির্বাচনি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এসব কমিটি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন নেতারা। নির্বাচন ঘিরেই দলীয় কার্যক্রম বেশি চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: