ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি দেশের বাইরে পাঠাতে হয়, সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ওসমান হাদির পরিবার এবং ইনকিলাব মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতে এ আশ্বাস দেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সারাদেশ তার জন্য দোয়া করছে। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি দেশের বাইরে পাঠাতে হয় বা যেখানে পাঠানোর প্রয়োজন হবে, সরকার সেখানেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।
হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এমন নৃশংস হামলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের পুরো চক্রকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এ ঘটনার আদ্যোপান্ত বিশ্লেষণ করে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য এরই মধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাক্ষাতের সময় হাদিকে ‘পরিবারের মেরুদণ্ড’ উল্লেখ করে তার বোন মাসুমা বলেন, সে (হাদি) ছোটবেলা থেকেই দেশকে মনেপ্রাণে ভালোবাসত। ছোটবেলা থেকেই সে বিপ্লবী। বিদ্রোহী কবিতা তার প্রিয়, সে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করতে ভালোবাসত। তার ১০ মাসের এক সন্তান আছে। মাসুমা আরও বলেন, ওর অনেক কাজ, ওকে বেঁচে থাকতে হবে। আপনারা বিপ্লবী সরকার, যে করেই হোক জুলাই বিপ্লবীদের বাঁচিয়ে রাখবে হবে। তা না হলে এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
অপরাধীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা জাবের বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেকে বাসায় ফিরে গিয়েছিল, ওসমান হাদি বাসায় ফিরে যায়নি। সে জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করত এবং জুলাই বিপ্লবের জন্য দিনরাত কাজ করত। যে ছেলেটা গুলি করেছে, শুনতে পাচ্ছি সে একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল কোন প্রক্রিয়ায় সে জামিন পেয়েছে সেটা তদন্ত করুন।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর বক্সকালভার্ট এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে আহত করে দুর্বৃত্তরা। পরে গুরুতর আহত ওসমান হাদিকে উদ্ধার করে বিকেল পৌনে ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেকের জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা শেষে রাত ৯টার দিকে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: