চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সার-কীটনাশকের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় ধানের আবাদে এবার লাভের আশায় দিন গুনছেন কৃষকরা। জেলার মাঠে মাঠে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। সোনালী ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষক পরিবারগুলোতে ছড়িয়েছে খুশির আমেজ।
তবে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আকস্মিক বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকার ধান নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। সেই সঙ্গে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে বিড়ম্বনা পৌহাতে তাদেরকে। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় মৌসুমের শেষ সময়ে এসে কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। এছাড়া ঝড়ের সাথে বজ্রপাতের ভয়ে অনেকে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে ধান কাটতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে ফলে ধান কাটার শ্রমিককে বেশি করে মজুরি দিতে হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় মোট ৫১ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩ হাজার ১৭০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৭ হাজার ২৮০ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ১৫ হাজার ৬৭০ হেক্টর, নাচোলে ৯ হাজার ৬৩০ হেক্টর এবং ভোলাহাটে ৬ হাজার ১৮৫ হেক্টর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ফজর আলী জানান, ধানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এবার সার-কীটনাশকের দামও নাগালে ছিল। কিন্তু শেষ সময়ের বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় ধান গোছানো নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। অনেকেই মাঠ থেকে ধান মাড়াই করে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
নাচোল উপজেলার নেজামপুর এলাকার মাসুদ হাসান জানান, এই এলাকার বিস্তীর্ণ ধানের মাঠে প্রায় ৫০ শতাংশ ধান কেটে ফেলেছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ ধান মাড়াইয়ের কাজও সম্পন্ন করেছেন। কৃষকের উঠোনে উঠোনে এখন ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। তবে নিচু এলাকার জমিগুলোতে পানি উঠে যাওয়ায় অনেক ধান বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে। ফলে এসব ধানের ওজন ও মান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
গোমস্তাপুর উপজেলার শওকত আলী বলেন, জেলার প্রায় সব এলাকাতেই কয়েক দফা বৃষ্টি হয়েছে। এতে মাঠের নিচু জমিগুলোতে পানি জমেছে। ফলে অনেক ধান পানিতে ভিজে গেছে। এতে কৃষকরা ধানের দাম হয়তো কিছুটা কম পেতে পারেন। তবে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের সার্বিক ফলন নিয়ে খুশি তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াসিন আলী জানান, এবার বোরো ধানের আবাদ ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার-কীটনাশকের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা ও কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তদারকির ফলে ভালো ফলন হয়েছে। কৃষক ধানের ভালো দাম পাবেন বলে আশাবাদী। তবে শেষ সময়ের বৃষ্টিতে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কিছুটা বেগ পাচ্ছেন কৃষকরা। তবে এতে কৃষক খুব বেশি ক্ষতির মুখে পড়বেন না।
এমএএ/আআ
মন্তব্য করুন: